স্বদেশ ডেস্ক:
একেই বলা যায়, বন্ধুত্বের মূল্য পরিশোধ! বার্সেলোনায় শুরুর দিনে লিওনেল মেসির গাইড ছিলেন রোনালদিনহো গাউচো। কাতালন ক্লাবটির জার্সি গায়ে চাপিয়ে লিওর প্রথম গোল ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তির পাস থেকেই। বিশ্বখ্যাত ক্লাবে কীভাবে নিজেকে পরিশীলিত করতে হয়, তাও মেসিকে শিখিয়েছেন রোনালদিনহো মাঠ ও মাঠের বাইরে দু’জনের রসায়ন ছিল দুর্দান্ত।
তারপর ক্রমশ ফোকাস থেকে দূরে সরে গেছেন ব্রাজিলিয়ান প্রতিভাটি। আর ব্যক্তিগত ক্যারিশ্মায় তা ভরাট করেছেন মেসি। রোনালদিহো সম্পর্কে মেসি বরাবরই শ্রদ্ধাশীল। এমনিতে অন্তর্মুখী হলেও প্রিয় ‘রনি’ নিয়ে অনর্গল কথা বলতে পছন্দ করেন বাঁ পায়ের জাদুকরটি। মাসখানেক আগে স্প্যানিশ রেডিওকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেওছিলেন, ‘এই জায়গায় পৌঁছানোর জন্য রোনালদিনহোর অবদান জীবনে কোনো দিন ভুলব না।’
লিওর সেই বন্ধু রনি এখন প্যারাগুয়ের কারাগারে। জাল পাসপোর্টের দায়ে তিনি ও তার ভাই রবার্তোকে গ্রেফতার করে সে দেশের পুলিশ। সূত্রের খবর, প্রবল আর্থিক অনটনের মধ্যে থাকা রোনালদিনহোর পক্ষে মামলা চালানো কিংবা ক্ষতিপূরণ দেয়ার ক্ষমতা নেই। এই দুঃসময়ে তিনি পাশে পেলেন মেসিকে। প্রিয় বন্ধুর জন্য প্রায় ৩৩ কোটি টাকা খরচ করে আর্জেন্টিনা থেকে প্যারাগুয়েতে চার সদস্যের আইনজীবী দল পাঠাচ্ছেন এলএমটেন। এছাড়া প্রয়োজন হলে ক্ষতিপূরণ বাবদ আরো অর্থ খরচ করতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করবেন না তিনি।
যাকে মুক্তির স্বাদ দেয়ার জন্য মেসির এই উদ্যোগ সেই রোনাল্ডিনহো অবশ্য কারাগারে বেশ খোশমেজাজেই রয়েছেন। শুক্রবার বন্দিদের নিয়ে আয়োজিত এক ফুটবল প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচে খেলতেও দেখা গেছে তাকে।
বলাই বাহুল্য, সাম্বা স্কিলের ঝলকে কার্যত একাই প্রতিপক্ষকে খড়কুটোর মতো উড়িয়ে দিয়েছেন রনি। তার দল জিতেছে ১১-২ ব্যবধানে। নিজে পাঁচবার লক্ষ্যভেদ করেছেন। সহ-ফুটবলারদের দিয়ে করিয়েছেন বাকি ছ’টি। এই প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন দলের পুরস্কার কী জানেন? একটি ১৬ কেজির শূকর। ক্যাবিনেটে বিশ্বকাপ, কোপা আমেরিকা, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লা লিগা, স্প্যানিশ সুপার কাপের পদক রয়েছে। ফিফার বর্ষসেরা হয়েছেন দু’বার। সেই রোনালদিনহো এখন কারাবন্দি হয়ে খেলছেন এই বিশেষ পুরস্কারের দিকে তাকিয়ে। ফুটবল প্রথমে তার নেশা, পরে পেশা। এই খেলা তাকে জোগায় বেঁচে থাকার রসদ।
সূত্র : বর্তমান